বাবা দালালীপনায় রাম-রাজত্ব, ছেলে বেহায়াপনার খলনায়ক যেই লাউ সেই কদু

  • নারীদের প্রেমের ফাঁদে পেলে ব্ল্যাকমেইল বহুবিবাহ,

  • বাদ যায়নি রোহিঙ্গা নারীও,

  • বাপ ছেলের ঘটনায় সমালোচনার তোলপাড়

এম ফেরদৌস, উখিয়া :


উখিয়ারঘাট হয়ে তুমব্রু এলাকার কথিত দালাল ইউসুপ ও তার ছেলে পরি আলম দুইজনই দুই ধরণের অপরাধ-অসমাজিক কর্মকান্ডে লিপ্ত হয়ে সমাজে নতুন করে সমালোচনা সৃষ্টি করেছে।

কথিত দালাল ইউসুপ আলীর ছেলে পরি আলম একাদিক মেয়ের জীবন নষ্ট করেছে। চৌধুরীর তকমা লাগিয়ে পিতাসহ পারিবারিক পরিচয় গোপন রেখে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া নারীদের মিষ্টি-মধুর ভাষা ও রোমিও স্টাইলে নামী-দামি রেষ্টুরেন্টে নিয়ে যাই। পরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে। সম্পর্ক গভীর করে অবৈধভাবে মিলামেশায় লিপ্ত হয়। আবার সেই ছবি এবং ভিডিও ধারণ করে ব্লেইকমেইল করা শুরু করে দেয়। এমন এক ঘটনা ঘটিয়েছে উখিয়া সদর এলাকায়।

এক সম্ভ্রান্ত পরিবারের মেয়েকে তার প্রেমের ফাঁদে পেলে তার মুবাইলে ধারণকৃত ছবি এবং ভিডিও টিকটকে ভুয়া আইড়ি খুলে নেট দুনিয়াই ভাইরাল করে রীতিমতো তাকে ব্লেইকমেইল করে হয়রানি করে যাচ্ছে কথিত দালাল ইউসুপের ছেলে পরি আলম উরপে চৌধুরী। শুধু উখিয়ায় নই এমন ঘটনা বিভিন্ন এলাকায় ঘটিয়েছে প্রেমের খলনায়ক ভুয়া চৌধুরী পরি আলম।

তার চলাপেরা রাজকীয় ভাবসাব, মটরসাইকেল হাকিয়ে নিয়মিত টাউটগিরিতে ব্যাস্ত, উপরে ফিটফাট তলে সদরঘাট এমন অবস্থা।
শুধু তাই নই,সে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্নভাবে পরিচয় বহন করে কখনো, ছাত্র কখনো,ব্যাবসায়ী কখনো সাংবাদিক। প্রকৃতপক্ষে সে মস্তবড় টাউটবাজ এমনটাই দাবি সুশীল সমাজের।

তার স্বয়ং পিতা ইউসুফ আলী দাবি করছে, তার ছেলে পরি আলম সাংবাদিক নই, চৌধুরীও নই, সে একটা লম্পট, মেয়েদের সাথে প্রেমের ফাঁদ বসিয়ে প্রতারণা করার কথা তুলে ধরলে উলটা আমি জন্মদাতা বাবাকে লোহার রড দিয়ে হামলা করেছে। যার কারণে তাকে আমি ত্যাজ্যপুত্র করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, যে লাউ সেই কদু, পরি আলমের পিতা ইউসুফ আলী নিজেই একটা নারী কেলোঙ্গরী প্রকৃতির লোক। সে রোহিঙ্গা নারীসহ ৩/৪ টা বিবাহ করেছে। সেখানে এক রোহিঙ্গা নারীকে বিয়া করে তাকে আইডি কার্ড দিয়ে বাংলাদেশী বানিয়ে দিয়েছেন।

শুধু তাই নই, কথিত এই ইউসুপ আলী প্রশাসনের নাম ভাঙ্গিয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানি ও জিম্মি করে মোটা অংকের টাকা আদায় করেন। ক্লাস ফাইভ পাস না করা ইউছুফ কখনো নিজেকে পুলিশ কখনো সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে প্রতিনিয়ত উখিয়ার ঘাট,তুব্র এলাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজি ও মাদকের কারবার চালিয়ে আসছিল । তার এসব কর্মকাণ্ডে প্রশাসনের কতিপয় অসাধু কিছু কর্মকর্তাও জড়িত ছিল বলে জানান এক বিশ্বস্ত মাধ্যম।

জানা যায়, ৮/৯ মাস আগে নাইক্ষ্যংছড়ি ও উখিয়া-টেকনাফে প্রশাসনের নাম ভাঙিয়ে এবং সোর্স পরিচয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল এমন অভিযোগে পত্র-পত্রিকাসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রচার হয়। সংবাদ প্রচারের মাধ্যমে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় প্রশাসন তার বিরুদ্ধে আইনিপদক্ষেপ গ্রহণ করার আগেই কৌশলে পালিয়ে অদৃশ্য হয়ে যায়।

তার বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক মামলা। উখিয়া থানায় ২০২১ সালের ১৬ মার্চ তারিখে (এফআইআর নং–২৬/১৭৯) মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়। এ ছাড়া ২০১৪ সালের ১৪ নভেম্বর (জিআর নং–৩৪০/১৪) এবং ২০১৯ সালের ১৮ ডিসেম্বর (এফআইআর নং–২০/৬০৭) উখিয়া থানায় আরও দুটি মামলা হয় তার বিরুদ্ধে। বাকি দুটি নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় ২০০৭ সালের ৮ মার্চ তারিখে (জিআরনং–৪২/০৭) বিশেষ ক্ষমতা আইনে এবং ২০১৫ সালের ২২ জুন (জিআর নং–১৩৮/১৫) তারিখে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়।

এদিকে ইউসুফ আলীর ছেলে পরি আলম বলছে, আমার বাবা ইউসুপ পালিয়ে লুকিয়ে ছিল ভালোই ছিল এখন এলাকায় এসে আরো জামিলা পাকাচ্ছে। ইউসুপ আলী আমার পিতা হলেও সে প্রকৃত একজন খারাপ মানুষ। সে আমার জন্মদাতা পিতা সত্য, কিন্তু তার অপকর্মের কারণেই তার গায়ে হাত তুলতে বাধ্য হয়।

প্রশাসনিক সূত্রে জানতে পারি, ইউসুফ আলী এক সময় প্রশাসনের বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের সোর্স পরিচয় দিয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের সুনাম নষ্ট করেছিল। যার কারণে প্রত্যেক ডিপার্টমেন্ট তার বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়েছিল। ফলে সে কৌশলে পালিয়ে লুকিয়ে ছিল। বর্তমানে তার খুজখবর অজানা রয়েছে।